Recent Work Update
বিগত ৫ মার্চ তারিখে মেদিনীপুরের বলপাই সৎসঙ্গ দ্বারা অনুষ্ঠিত উৎসবে স্বস্তি সেবক বাহিনীর পরিচালনায় একটি ফ্রি স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়। উক্ত শিবির থেকে বহু মানুষ স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেন। বহু মানুষ কে বিনামূল্যে ঔষধ বিতরন করা হয়। এই পরিসেবা গ্রহন করে সকলে আনন্দিত ও তৃপ্ত হন।
আজ 26 শে জানুয়ারি। স্বস্তি সেবক বাহিনীর উদ্যোগে সকালে প্রজাতন্ত্র দিবস উৎযাপিত হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর থানার বামুন্দা গ্রামে।পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত, গান,কবিতা আজকের দিনের তাৎপর্য প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করা হয়।অনুষ্ঠান সমাপ্ত হলে ছাত্র ছাত্রী গ্রামবাসী কে টিফিন দেওয়া হয়।এই ভাবে প্রথম পর্যায়ের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।
তার পর প্রথম পর্যায়ের অনুষ্ঠান শেষ করে স্বস্তি সেবক বাহিনীর 6-7জন সদস্য মোটর সাইকেলে করে কম্বল মিষ্টি প্যাকেট নিয়ে গন্তব্য স্থলে পৌঁছে যাই।যেখানে গিয়েছিলাম জায়গাটির নাম চকশ্রীকৃষ্ণ ।গ্রামটি বেশ বড়।ফাঁকা মাঠের মধ্য দিয়ে বেশ কিছুক্ষন গাড়ি ছুটে চলেছে।গ্রামটির শেষ প্রান্তের একটি কোনে কিছু আদিবাসী মানুষের বাস।বড় একটা পুকুর আছে তার পাড়ে এরা থাকে।একটি পরিবারে গেছি কম্বল প্যাকেট তুলে দেওয়ার জন্য।লোকটির পরনে নেংটিগামছা, চুলগুলো এলোমেলো,লম্বা শক্তশরীর। বয়স বছর পঞ্চাশ।চোখে মুখে চরম দারিদ্রের ছাপ।ঠোঁটের কোনে আনন্দের ছিলিক হাসি।বলে উঠলো "বাবু মুরা পাইছি উরা পাইনি"আমি থমকে গেলাম। ব্যাপারটা কি হলো।হরেন মূর্মুর মুখের ভাষায় বলি"আইজ সুকা ব্যালা গুটা কয়েক গাড়ি আইসে মুদেরকে উগুলা দিগ্যাছে"।দেখলাম বাঁশে একটা কম্বল ঝুলছে।ব্যাপার টা বুঝলাম, সকালে কারা এসে কিছু মানুষ কে কম্বল দিয়েছে।বাকি পরিবার গুলোকে আমরা কম্বল প্যাকেট দিলাম।মানুষ গুলো সহজ সরল।সভ্য সমাজের জটিল মনস্তত্ত্ব বোধ হয় আজ ও স্পর্শ করতে পারেনি।আমাদের কম্বল প্যাকেট বেঁচে গেল।এখন কি করা যায়।খবর নিয়ে জানলাম অনেকটা দূরে এদের আর একটা পাড়া আছে।জায়গাটার নাম পঁচেট।এ পাড়াটা বেশ বড়ো।সবাই দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে।ছোট্ট ছোট্ট কুঁড়ে ঘর। খড় কিংবা পেপার দিয়ে ছাউনি।এরা জগৎ সংসারকে শুধু দিয়েই যায়।পরিনামে কোনো প্রত্যাশা নেই।অবহেলিত সম্প্রদায় নামে সভ্য সমাজের কাছে পরিচিত।সপ্ন উচ্চাশা কামনা বাসনা এই শব্দ গুলোর কোনো দাম নেই এদের কাছে।এই বেশ ভালো আছি এই রকম একটা মনোভাব।যাই হোক আসল কথায় আসি আমরা এক এক করে কম্বল প্যাকেট দিলাম।দেখি একটা বুড়ি ঠক ঠক করে কাঁপছে।নাম বীজা বুড়ি।শীত বেশি নেই তাহলে কাঁপছে কেন।বীজা বুড়ি বোধ হয় নার্ভের রোগে ভুগছে।বুড়ি বলে "মোর বিটা একটা দাও"আমাদের সামর্থ্য খুব কম।ইচ্ছা করে লাভ দিয়ে চাঁদ ধরি কিন্তু তা আর হয় না।লাভ দিয়ে উপরের দিকে একটু উঠতে পারি মাত্র।বীজা বুড়িকে একটু সান্তনা দিলাম।আবার আসবো বলে বললাম।আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে যা কম্বল প্যাকেট ছিল এক এক পরিবারের মধ্যে বিতরন করে দিলাম।বাইকে করে যখন আসছি হু হু করে ঠান্ডা বাতাস ব ইছে। কানের কাছে যেন বার বার বীজা বুড়ির কথাটা ধ্বনিত হয়ছে"বাবু মোর বিটাকে একটা দাও।বাবু মোর বিটা কে একটা দাও"।
এইভাবে আজকের কম্বল বিতরন সামপ্ত করলাম জয়গুরু
🖊️পুরো বিষয় নিয়ে অভিজ্ঞতা শেয়ার করে লিখেন প্রবীর সাহু দা
Swasti Pathshala
শনিবার (14.08.21)আমাদের স্বস্তি সেবক বাহিনীর পক্ষ থেকে বিনোদ সিং দা , রাহুল কুমার যশ দা , এবং দেবাশিস শাসমল দার পরিচালনায় প্রথমে সেয়াগরিয়া সৎসঙ্গ কেন্দ্র মন্দিরে শ্রী সুকুমার গাঁয়েন মহাশয়ের সহযোগিতায় সকাল আটটা থেকে আমাদের প্রথম ত্রান দেওয়া শুরু হয়, প্রায় 100 জন মানুষকে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয় এবং তারপর দ্বিতীয় শিব গাছিয়া সৎসঙ্গ কেন্দ্র মন্দিরে শ্রী রাধাগোবিন্দ খাঁ ও তার পুত্র সন্দ্বীপ খাঁয়ের সহযোগিতায় দুপুর 12 টা থেকে 3 টা পর্যন্ত, প্রায় 60 জন মানুষকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরন করা হয়।
*পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার সাঁকরাইল অধিবাসী শ্রীশ্রীঠাকুরের একনিষ্ঠ ভক্ত শ্রদ্ধেয় প্রদীপ সাহুদা তাঁর মেয়ের বিয়ের জন্য স্বস্তি সেবক বাহিনীর কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেছিলেন। তাঁর এই আবেদনে সাড়া দিয়ে আপনারা অনেকে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতায় ৬ই মার্চ, রবিবার প্রদীপ সাহুদার মেয়ের শুভ বিবাহ সুসম্পন্ন হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসের শুভ সন্ধিক্ষণে পরমপিতার রাতুল চরনে সদ্য বিবাহিত দম্পতির সামগ্রিক মঙ্গল প্রার্থনা করছি এবং যাঁরা আর্থিক সাহায্য প্রদান করে এই বিবাহ কে সুসম্পন্ন করতে সহযোগিতা করেছেন তাঁদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। জয়গুরু।*
@প্রদীপ সাহুঃ *আমি স্বস্তি সেবক বাহিনীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকব। আমার মতো কোন গরীব বাবার মেয়ে অর্থের অভাবে যেন অবিবাহিত না থাকে। এইরকম ভাবে স্বস্তি সেবক বাহিনী মানুষের সেবায়, মানুষের পাশে সবসময় থাকে। জয়গুরু।*
মহালয়ার পুন্য লগ্নে দেবী পক্ষের আরাধনার শুভ আরম্ভে, বানভাসি মানুষের পাশে থাকার একটু চেষ্টা।
স্বস্তি সেবক বাহিনীর উদ্যোগে ও কর্মীর ব্যাবস্থাপনায় আমরা ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিলাম পূর্ব মেদিনীপুর এর ( বিশাডাঙ্গর ও কুঞ্জপাড়া ) নামে দুটি গ্রামে।
সারারাত ধরে কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে ত্রানের আনন্দবাজারের প্রসাদ তৈরী করেছেন। প্রায় ১০০০ জন মানুষের মুখে প্রসাদ তুলে দিতে পেরেছি আমরা।
এইভাবে আরো মানুষের পাশে আমরা পরবর্তী কালে থাকবো, এবং স্বস্তি সেবক বাহিনীর কার্যকলাপ চলবে আপনাদের সাহায্য সহযোগিতা খুব প্রয়োজন।
"স্বস্তি সেবক বাহিনীর বন্যা পীড়িত এলাকায় ত্রাণ কার্যের প্রস্তুতি"
আমাদের "স্বস্তি সেবক বাহিনীর" উদ্যোগে দীঘার সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন বন্যায় প্লাবিত অঞ্চলগুলিতে কিছু ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে তারই কিছু মুহূর্ত এই ছবি গুলির মাধ্যমে তুলে ধরা হলো।
আশা করি সবাই এই ভাবে আমাদের পাশে থাকবেন যাতে আমরা পরবর্তীকালে এই রকম আরো সেবামূলক কাজ করে যেতে পারি।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নিমতলা।ঝাঁ চকচকে রাস্তা।রাস্তার ধারে গুটিকয়েক খড়ের ঝুপড়ি ঘর।তাতে অনেক গুলো মানুষের বসবাস।চারটা খুঁটির উপর দুটো এলব্যাসটার তাতে নয়জন মানুষ।ওটাতেই রান্না খাওয়া ঘুমানো ওঠা বসা সবকিছু।সামনে সবুজ মাঠ। দক্ষিনা বাতাসের অহরহ আনাগোনা। লোকালয় অনেক দূরে।রোডের উপর দু একটা চায়ের দোকান আছে।আর এক সাইডে আদিবাসী পাড়া।পনেরো কুড়িটা বাড়ি আছে।সবার বাড়িতে অনেক গুলো ছেলেমেয়ে।খাওয়া দাওয়ার তেমন কোন সংস্থান নেই।তবে বেশ স্ফূর্তিতে থাকে। সারাদিন তাদের মতো করে খেলাধুলা করে।বাপ মা সকালে বেরিয়ে যায় সন্ধ্যায় বাড়ি আসে।বাড়ি এলেও তেমন ছেলেমেয়েদের তেমন যত্ন নেওয়া হয় না।যা ইনকাম করে তার সিংহ ভাগ হাঁড়িয়া মদ্য পান করে আনন্দে তাদের জগতে থাকে।রাস্তার ধারে নাম না জানা গাছ গুলো যেমন অনাদরে প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে সংগ্রাম করতে করতে বড়ো হয়ে উঠেছে।এরাও তেমনতরো ভাবে বড়ো হয়ে উঠছে।সারাদিন গাছে চড়ে,নাচানাচি করে,সাইকেল চালায়,কারেন্ট খুঁটিতে উঠে লাফ দেয়।এ গুলো নিত্যদিনের কর্ম।এই ভাবেই বেশ আনন্দে দিন কাটছিল তাদের।দশ বারো দিন আগে ঘটে গেল সেই ঘটনা টা, যা তাদের মনে থাকবে সারাটা জীবন।সকালে ঝলমলে রোদ।বাপ মা গেল কাজে।দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতে গেল।দুপুরে যা পেয়েছে তা খেয়েছে।এক জোট হয়ে খেলাধূলা করছিল।সুরেন মুর্মুর ভাষায় বলি"বাবু মুঁ যঙখঙ ঘর আসি মোর মাজিয়া ব্যাটা গোঁ গোঁ করছে তার একটু পরে কাটি গ্যালা"বলতে বলতে চোখের কোনে জল জমেছে।বুঝলাম ছেলেটা মারা গেছে।সন্তান বিয়োগের কষ্ট চোখে মুখে স্পষ্ট।ছোট ছেলাটা লাফাতে গিয়ে পা ভেঙ্গেছে।আমি বললাম সে না হয় বুঝলাম।কিন্তু এ সব হলো কিভাবে?"বাবু জ্যাঙতা সরকার নাকি বুলছে মুদের কারেন্ট দিবে।কাজ ও চলছে।"পনেরো বছরের ছেলেটা হূক করতে গিয়েছিল।জানতো না কাছ দিয়ে গেছে 33000ভোল্ট।এটা12000ও হতে পারে।আমার অভিজ্ঞতা নেই।তারের ব্যান্ডিল নিয়ে সবাই এক জোট হয়েছে।কম বেশী সবাই ধরেছে।আনন্দ আলো জ্বলবে।লাগাতে গিয়ে পজেটিভ নেগেটিভ কি করেছে কয়েক সেকেন্ডে ঘটনা ঘটে গেল।কেমন একটা আওয়াজ হলো, ধোঁয়া ,বিশাল আগুনের ঝলকানি,গোঁ গোঁ আওয়াজ মৃত্যু।বাবা গো মা গো আঙা.....বীভৎস চিৎকার।চামড়া পুড়ে গেছে,পরের ছবি সবাই দেখছেন।দূর থেকে লোক ছুটে এসে হাসপাতালে দিয়েছিল।প্রাথমিক চিকিৎসা করেই ছেড়ে দিয়েছে।বর্তমান অবস্থা গন্ধ বেরোচ্ছে, ঘা শুকোচ্ছে ধীরে ধীরে।ঠিক করে খেতে পায় না।পথ্য তো দূরের কথা।প্রায় সব গুলোই বিছানা শয্যায়।আজকে স্বস্তি সেবক থেকে দিলাম মুড়ি বিস্কুট ছোলা বাদাম, মুগ, দুধের প্যাকেট, হরলিক্স, মলম, গজ, বিটাডাইন লোশন।একটু আশার কথা অন্যান্য সংস্থা কিছু কিছু জিনিস দিয়েছে দেখলাম।তবুও তা প্রয়োজনের থেকে খুবিই কম।যখন লোশন দিয়ে পরিস্কার করে মলম লাগানো হচ্ছিল তারা বাবা গো মা গো করছে।কাজ শেষ করে যখন ফিরছি বাইকে করে বাতাসটা বেশ গায়ে লাগছে।বার বার মনে হচ্ছে তাদের কান্নার শব্দ টা বাবা গো....মা গো....আ্যঙ......।
বিনয়াবনত প্রবীর সাহু।